মোয়াজ্জেম হোসাইন সাকিল :

সমুদ্রের তীরের ঝাউবাগান কিংবা ম‌্যানগ্রোভ ফরেস্ট উপকূলের মানুষকে রক্ষা করে। ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন কিংবা যেকোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে প্রথম ধাক্কাটা এসে লাগে এই ঝাউবাগান কিংবা ম‌্যানগ্রোভ ফরেস্টে।
রোহিঙ্গারাও মিয়ানমার সীমান্তে আমাদের জন‌্য ঝাউবাগান কিংবা ম‌্যানগ্রোভ ফরেস্টের মতোই। মিয়ানমারের যতো নির্যাতন সব তাদের উপর।

এখন ঝাউবাগান কিংবা ম‌্যানগ্রোভ ফরেস্ট উজাড় হয়ে যাচ্ছে। এখন দূর্যোগের প্রথম ধাক্কাটাই লাগবে আমাদের উপর।
আমাদের …. বাঙালীদের অনেকেই যোগ দেব মিয়ানমারের চর হিসেবে। ভারতের চর যেমন আছি সেরকম।
আমাদের বাসায় আজ কি রান্না হয়েছে সেটাও চলে যাবে মিয়ানমারে। আমার পাশে আপন সেজে থাকা গুপ্তচরই সব খবর সরবরাহ করবে মিয়ানমারকে। এখনও করছে। ভারতের জন‌্য করছে বেশি। আমাদের মাঝে অনেকেরই দ্বিতীয় বাড়ি ভারতে। অনেকেরই দ্বিতীয় বাড়ি মিয়ানমারে। এর পেছনে যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত কারণও আছে।
মায়ানমারের বাহিনীর গুলি এসে পড়ছে বাংলাদেশের ভূমিতে। মিয়ানমারের হেলিকপ্টার উড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে। কেন এতো স্পর্ধা তাদের। আমরাই বা কেন এর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছিনা।

আমরা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মোটেও সোচ্চার হচ্ছিনা। সোচ্চার হচ্ছি ঝাউবাগান কিংবা ম‌্যানগ্রোভ ফরেস্ট রূপী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে। রোহিঙ্গাদেরকে তাদের নিজ ভূমিতে টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশকে অনেক বেশি কৌশলী হওয়া জরুরী। কিন্তু আমরা কোন ধরণের কৌশলই দেখছিনা।
ভৌগলিকভাবে এই অঞ্চলটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় আরকানকে শক্ত ঘাঁটি বানানোর জন‌্যই রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। ভারত এবং চীন মিয়ানমার থেকে এই ভৌগলিক সুযোগ ভোগ করতে মরিয়া। বাণিজ‌্যিক সুযোগের জন‌্যও মরিয়া।
আরকান রোহিঙ্গামুক্ত হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে বাংলাদেশ। এই জন‌্য বাংলাদেশেরই উচিত হবে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো। বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে ধরে রোহিঙ্গাদেরকে তাদের নিজ ভূমিতে টিকিয়ে রাখতে তদবির চালানো। বন্ধু কূটনৈতিকদের ধরে তদবির চালানো। বিশ্বব‌্যাপী একটি জনমত তৈরির চেষ্টা করা। এই কূটনৈতিক তৎপরতায় সুফল আসুক বা না আসুক। এটা ছাড়া কোন উপায় দেখছিনা। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ ভূমিতে টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশকে কৌশলী হতেই হবে।
চইলকিনা হন কৌসলনে নজানি।